Thursday, October 23, 2025

সাবলেট উঠে বাসার শিশুকেই অপহরণ, যেভাবে ধরা পড়ল অপহরণকারী দম্পতি

আরও পড়ুন

ছোট শিশু আছে এমন বাসায় ওঠেন সাবলেট হিসেবে। শিশুদের সঙ্গে গড়ে তোলেন সখ্যতা। সুযোগ বুঝে অভিভাবকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে শিশুদের অপহরণ করেন। এরপর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে আটকে রেখে পরিবারের কাছে চান মুক্তিপণ। দিতে না চাইলে নির্যাতনের পাশাপাশি দেয় হত্যার হুমকি।

সম্প্রতি কামরাঙ্গীরচরে এক শিশুকে অপহরণের ঘটনায় ফয়সাল ও কাকলী দম্পতিকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানায় পুলিশ।

জানা গেছে, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের আলীনগরের একটি বাসায় ১৯ অক্টোবর চার বছর বয়সি শিশু  আব্দুল হাদি নূর খেলছিল।‌ পাশেই ঘুমিয়ে ছিলেন তার মা। ঘুম ভাঙলে দেখেন, আদরের সন্তান পাশে নেই।

পাশের সাবলেটে থাকা দম্পতিও নিখোঁজ। ফোন করলে শিশুটি ওই দম্পতির কাছেই আছে বলে জানান তারা। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই ফোন বন্ধ। শিশুটিকে নিয়ে পালানোর দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরায়।

আরও পড়ুনঃ  ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন নিয়ে সারজিস আলমের স্ট্যাটাস

পরিবারের সদস্যরা জানান, শিশুটিকে সর্বত্র খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সাবলেটে থাকা দম্পতি জানায়, শিশুটি তাদের কাছে রয়েছে। নানা টালবাহানায় সময়ক্ষেপণ করতে থাকে তারা। শেষ পর্যন্ত মোবাইল বন্ধ করে দেয় এবং নম্বর ব্লক করে ফেলে।

পরে শিশুর মায়ের ইমো নম্বরে একটি ম্যাসেজ পাঠিয়ে জানানো হয় নূরকে অপহরণ করা হয়েছে, ফিরে পেতে দিতে হবে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ।

নূরের মা বলেন, অপহরণকারীরা ইমোতে ম্যাসেজে কথা বলছিল, কিন্তু ফোন ধরছিল না। তারা ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে, না দিলে ছেলেকে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়। 

কিছু বুঝে উঠতে না পেরে পরিবার থেকে ৫ হাজার টাকা পাঠানো হয় অপহরণকারীদের কাছে। পরে পুলিশের সাহায্য চান তারা। দুদিন পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপহৃতের অবস্থান শনাক্ত হয় মিরপুরে।

আরও পড়ুনঃ  সচিবালয় অভিমুখে ইশরাক সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

এরপর ক্লাসিক আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মো. পারভেজ ও কাকলী আক্তার দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত শিশু নূরকে।

তদন্তে জানা যায়, দম্পতি ১৫ দিন আগে শিশুটির পরিবারের বাসায় সাবলেট হিসেবে ভাড়া ওঠে। এরপর শিশুটির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। ঘটনার দিন শিশুর মায়ের ঘুমের সুযোগ নিয়ে চিপসের প্রলোভনে অপহরণ করে।

ডিএমপির কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম বলেন, অপহরণকারীরা পরিকল্পিতভাবে সাবলেট বাসা ভাড়া নিয়েছিল। তারা সেখানে ফ্লোরিং করে থাকত। পরে সুযোগ বুঝে শিশুটিকে অপহরণ করে।

আরও পড়ুনঃ  আজ যে দামে বিক্রি হবে সোনা

পুলিশ জানায়, এরা সাধারণত আবাসিক হোটেলে ভাড়া থাকেন। পরে বিভিন্ন বাসায় সাবলেট হিসেবে উঠে শিশু অপহরণ করে হোটেলে আটকে রাখেন এবং মুক্তিপণ আদায় করেন। মুক্তিপণ আদায় করতে না পারলে শিশু বিক্রির অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ তদন্তের পাশাপাশি মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ওসি আমিরুল ইসলাম আরও জানান, অপহরণকারীদের কাছে ১৫-২০টি সিম পাওয়া গেছে। এগুলোর একটিও তাদের নিয়মিত ব্যবহারের নয়। তারা মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত কিনা, সেটি তদন্তাধীন।

এ ধরনের বিপদের হাত থেকে বাঁচতে সাবলেট দেওয়ার আগে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ